মেয়ের ভালো ফলে ক্ষুব্ধ পিতার আন্দোলনের ডাক
|
১৬ পৌষ ১৪২১ |
Tuesday, December 30, 2014
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মেয়ের ভালো ফলে বিস্মিত এক পিতা পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিলে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ফেইসবুকে দেয়া এক পাবলিক স্টাটাসে অভিভাবক ফাহমিদুল হক ‘শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলন’ নামে একটি মঞ্চ করার কথাও জানিয়েছেন। যাতে অন্যদের শরিক হওয়ার ডাক দিয়েছেন তিনি।
ফাহমিদুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
█ ফেইসবুক স্টাটাসে তিনি লিখেন, “আমার আর রিপার মেয়ে তাহিয়া জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। সব সাবজেক্টে এ প্লাস। কিন্তু আমি খুশিতে আত্মহারা নই। কারণ আমি জানি ও আপাতত জিপিএ ফাইভ পাবার যোগ্য নয়।
ও ওয়ান থেকেই মোটামুটি ‘সি’ পেয়ে পাশ করে আসছে। আমি জানি ওর জিপিএ ফাইভ পাবার যোগ্যতা আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে তা নেই। পিতা-মাতা হিসেবে আমরা ওকে ‘সি’ পেয়ে বড় হয়ে ওঠার পরিবেশই দিয়েছি। ও স্কুলে যাবে, ক্লাস করবে, সবার সাথে মিশবে, সামাজিক হবে, হাসবে খেলবে, বাইরের বইপত্র পড়বে, প্রচুর দুষ্টুমি করবে, ডিজনি-পিক্সার-ড্রিমওয়ার্কস নির্মিত ফেইরি টেলগুলো দেখবে, নিজেই ফেইরি হয়ে স্বপ্নরাজ্যে ঘুরবে…। কিন্তু হাসতে খেলতে কয়েক বছর পেরিয়ে গেল, ফাইভের পাবলিক এক্সাম চলে এলো। আমরা ওকে চাপাচাপি শুরু করলাম। খেয়াল করা গেল, ও অংকে বেশ দুর্বল। হাফ ইয়ারলিতে পঞ্চাশের কম নম্বর পেয়েছে। টিউটর বিদেয় করে নিজেই অংক-বিজ্ঞান পড়ানো শুরু করলাম। নির্বাচনী পরীক্ষায় অংকে সে ৭৩ পেল। এরপর প্রায় এক দেড়-মাস ঘরে বসে প্রচুর পড়লো সে। ও খেটেছে অনেক। তাতে সি থেকে বি বা এ হবার কথা। কিন্তু সবগুলোতে এ-প্লাস পাওয়া অ্যাবসার্ড ব্যাপার। আমি ওকে শেষ দুই মাস পড়িয়েছি। আমি জানি। ওর পরীক্ষাও ভালো হয়েছে কিন্তু, দুই-তিন মাসে এমন কোনো ম্যাজিক কেউ দেখায় নি যে,বা জিনি এসে ওর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে যায় নি যে, ও গোল্ডেন এ প্লাস পাবে। বলাবাহুল্য, সে ফাঁস হয়ে যাওয়া কোনো প্রশ্নও হাতে পায় নি। আমরা সেসব খুঁজিও নি।
ওর নম্বর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমি শতভাগ নিশ্চিত। এই ইনফ্ল্যাটেড এ-প্লাস বিস্ফোরণ বন্ধ হওয়া দরকার। এটা শিশুদের রেজাল্ট সম্পর্কে ভুল ধারণা দিচ্ছে। প্রশ্নফাঁসের কথা আলাদা করে বলার প্রশ্নই আসে না। আর পিএসসির মতো শিশুহত্যাকারী পাবলিক এক্সাম আজকেই উঠিয়ে দেয়া দরকার। আগেই বলেছি শিক্ষানীতির বহির্ভূত পিএসসি এক্সাম চালু করেছে যারা, তারা ‘সিরিয়াল চাইল্ড কিলার’। আমরা গঠন করেছি ‘শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলন’। আমরা বই উৎসবের দিনে, পহেলা জানুয়ারি দাঁড়াব আজিমপুরের তিনটি স্কুলের সামনে। ১১:০০টায় অগ্রণী স্কুল, ১১:২০ ভিকারুন্নেসা এবং ১১:৩০ আজিমপুর গার্লস স্কুল।
আমাদের দাবি: আমাদের দাবি: “সকল পর্যায়ে প্রশ্নফাঁস করে শিক্ষা ধ্বংসের আয়োজন রুখে দাঁড়াও! এ-প্লাসের দুর্নীতি, মূল্যায়নে কারচুপি বন্ধ করো! অবিলম্বে শিক্ষানীতি-বিরোধী শিশুধ্বংসী পিএসসি পরীক্ষা বাতিল করো!’
আপনারাও যোগ দিন।”