বগুড়ার সোনাতলার কোয়ালীপাড়া গ্রামে সদ্য পুরুষে রূপান্তর ইতি আকতার (ইদ্রিস আলী) বিয়ের পিড়িতে বসেছেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি এক লাখ টাকা দেন মোহরানায় কলেজ বান্ধবী সাবিনা আকতারকে বিয়ে করেন। উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে মুলবাড়ি ঈদগাহ মাঠের ঈমাম মাওলানা আবু মুসার ফাজিলপুরের বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বর ও কনেকে একনজর দেখতে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ ভিড় করেন।
স্থানীয় জনগণ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সোনাতলা উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের কোয়ালীপাড়া গ্রামের সোনা মিয়ার মেয়ে ও সৈয়দ আহম্মদ কলেজের মানবিক একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ইতি আকতার (২১) এক মাস আগে পুরুষে রূপান্তর হন। আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে তার নাম পরিবর্তন ও বয়স সংশোধন করা হয়। ইতি আকতার থেকে তার নাম দেয়া হয় ইদ্রিস আলী। মাদ্রাসা ও কলেজ জীবনে দীঘলকান্দি গ্রামের আমজাদ হোসেন আকন্দের মেয়ে সাবিনা আকতার (১৮) তার ঘনিষ্ট বান্ধবী ছিল। ইতি পুরুষ হবার পর তিনি সাবিনাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। সাবিনাও রাজি হন।
দিগদাইড় ইউনিয়নের কাজী (বিবাহ ও তালাক রেজিষ্টার) রবিউল ইসলাম বলেন, ইদ্রিস আলীর বিয়েতে এক লাখ টাকা দেন মোহরানা ধার্য হয়েছে। ৬০০ টাকা নগদ ও ৯৯ হাজার ৪০০ টাকা বাকী রেখে বিয়ের রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে। ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান বলেন, মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার কথা তিনি জানেন। মঙ্গলবার রাতে তার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর বর ইদ্রিস আলী তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, সাবিনা তার মাদ্রাসা থেকে কলেজ জীবন পর্যন্ত ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। তাদের বন্ধুত্বকে চিরস্থায়ী করতে দু’জনই একে অপরকে বিয়ে সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তার দাম্পত্য জীবন সুখের হবার জন্য সকলের দোয়া চেয়েছেন। কনে সাবিনা আকতার একই মন্তব্য করে বলেন, ইদ্রিসকে বিয়ে করেই সুখি হতে চান। ইদ্রিস আলীর বাবা সোনা মিয়া বলেন, একটি ছেলের আশায় সাতটি সন্তান নিয়েছেন। ছয় মেয়ের পর আল্লাহ তাকে একটি মেয়ে সন্তান দান করেন। ৬ষ্ঠ মেয়ে ইতি আকতার ছেলেতে রূপান্তর হওয়ায় তিনি এখন দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ের গর্বিত বাবা। ইদ্রিস আলী তার বান্ধবী সাবিনাকে বিয়ে করায় তিনি খুব খুশি। মেয়ের বাবা আমজাদ হোসেন আকন্দ প্রথমে এ বিয়েতে রাজি না হলেও পরে গ্রামবাসীদের অনুরোধে রাজি হন। তবে মেয়ের বিয়েতে তাকে কোন যৌতুক দিয়ে হয়নি।
সোনাতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ রকিবুল আলম চয়ন বলেন, জন্মগতভাবে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ পৃথিবীতে আসে। এদের মধ্যে মেয়ে হয়ে জন্ম নেয়া অনেকের মাঝে পুরুষ ভাব ও পুরুষ হয়ে জন্ম নেয়া অনেকের মাঝে মেয়েলি ভাব থাকে। এটা জীনগত ভাবেই হয়। তাই জীনগত ভাবে সে (ইদ্রিস) আগে থেকেই পুরুষ ছিল। তার মাঝে মেয়েলি ভাব থাকার কারণে কেউ বুঝতে পারেনি। বর ও কনের শিক্ষক সৈয়দ আহম্মদ কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুজ্জামান বলেন, ইদ্রিস চুল কাটা অবস্থায় সার্ট-প্যান্ট পড়ে কলেজে আসে। এখন সে ছেলেদের সাথে মিশছে এবং মসজিদে সবার সাথে নামাজ আদায় করছে। এদিকে সম্প্রতি পুরুষে রূপান্তর ইদ্রিস আলী গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ফাজিলপুরের এক মাওলানার বাড়িতে তার বান্ধবী সাবিনা আকতাকে বিয়ে করার খবর প্রচার হলে বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের দেখতে ভিড় করছেন।-সময়ের কন্ঠস্বর
সংবাদকন্ঠ.কম |
ফোন: ৮৮ ০২ ৮১৪৪৪৬০, ৮১৪২২৮০ , নিউজ রুম মোবাইল: ৮৮-০১৭১১০৭৪৬১৬
ফ্যাক্স: ৮৮ ০২ ৮১৪২২৮০ ,ইমেইল: sangbadkantha@gmail.com
ঠিকানা : ৬৮/৬৯ ,গ্রীনরোড, কনসেপ্ট টাওয়ার ,৬ষ্ঠ তলা, ঢাকা-১২০৫ ।
কপিরাইট © ২০২০ সকল স্বত্ব ® সংরক্ষিত।
© 2024 সংবাদ কণ্ঠ, All rights reserved.