জুয়েলারী জগতে আলোচনার কেদ্রবিন্দুতে “ডায়মন্ড সিটি” কেবিন ক্রূ/ ফ্লাইট স্টুয়ার্ড নেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (ছেলেমেয়ে উভয়ই) বিনা অভিজ্ঞতায় “কেবিন ক্রু” পদে লোক নিবে নভো এয়ারলাইন্স, যোগ্যতা HSC, আবেদন করতে পারবে ছেলে মেয়ে উভয়ই। অচেনা নায়ক ! Unseen Hero !! কেবিন ক্রু নিয়োগ দেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ,যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক ,আবেদন করতে পারবে ছেলে মেয়ে উভয়ই বিনা অভিজ্ঞতায় “কেবিন ক্রু” পদে চাকরি, যোগ্যতা HSC পাশ, বেতন ৮০০০০ টাকা ইউএস-বাংলার বহরে নতুন বোয়িং যুক্ত ‘চাকরির হতাশায়’ ঢাবি গ্রাজুয়েটের আত্মহত্যা ! নতুন ৫ টিভি চ্যানেলের অনুমোদন , মিডিয়াতে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ জবস এওয়ানের এক যুগ পূর্তি
ঢাকা, মে ৪, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৪:৪৩:৪৩

‘আমার ছেলেকে আমি মারছি। এতে কার কি?

| ২৭ অগ্রহায়ন ১৪২২ | Friday, December 11, 2015

 

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : তাই বলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাবা তার ছোট্ট শিশুটিকে হাত-পা বেঁধে বাঁশ দিয়ে পেটাবে? নির্মম নির্যাতনের পর গুরুতর আহত ছেলেকে আবার হাসপাতালে নিতেও বাধা দেবে? এ কেমন বাবা? এমন বাবাও কি পৃথিবীতে থাকতে পারে?

এসব প্রশ্ন কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের বেতুয়া গ্রামবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। বাবা হয়ে নিজের মাদরাসা পড়ুয়া শিশুকে এমন নির্যাতনের ঘটনা তারা আগে শোনেনি।

হতভাগ্য শিশু রিমন (৯) কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ও শিশু ওয়ার্ডের ৩নং বেডে শুয়ে প্রচণ্ড ব্যথায় কাতরাচ্ছে। আর পাশে বসে অঝোরে কাঁদছেন তার মা জেসমিন বেগম।

রিমনকে নির্যাতনকারী তার বাবা আবুল কালামের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী রিমনের মা জেসমিন বেগম সন্তানদের নিয়ে বেতুয়া গ্রামে থাকেন । আর দ্বিতীয় স্ত্রী সুফিয়া বেগম ও দুমেয়েকে নিয়ে কালাম থাকেন উপজেলার মুনশুরপুর গ্রামে ভাড়াবাড়িতে।

রিমনের দাদি নার্গিস বেগম তার অপর ছেলে শামীমের সঙ্গে মুনশুরপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

শিশু রিমনের দাদি নার্গিস বেগম জানান, বছর দুই আগে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মুনশুরপুর মদিনাতুল মনোয়ারা হাফিজিয়া মাদরাসার হেফজে খানায় ভর্তি করা হয় রিমনকে। প্রতি মাসে তার জন্য সব মিলিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে এক হাজার টাকা করে খরচ দিতে হয়। কিন্তু গেল দু’মাসের টাকা বকেয়া পড়ে যায়। দু’দিন আগে মাদরাসার ‘হুজুর’ (প্রিন্সিপাল) রিমনকে তার বাবার কাছ থেকে বকেয়া বেতনের টাকা আনতে বলেন। বৃহস্পতিবার সকালে রিমনের বাবা আবুল কালাম মাদরাসার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ‘হুজুর’ তাকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে এসে বকেয়া বেতনের কথা বলেন। হুজুরের সামনে রিমনও বাবার কাছ বকেয়া বেতন দাবি করে। আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবা কালাম তার ছেলেকে বেতুয়া গ্রামে যেতে বলেন। কথামতো রিমন দুপুরে বেতুয়া গ্রামে যায়। সে সময় বাড়িতে রিমনের মা না থাকার সুযোগে বাবা কালাম তার ছেলের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এরপর কাঁচা বাশ দিয়ে পেটাতে থাকেন। শিশুটির চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে রক্ষা করে।

নির্যাতিত ছেলেকে নিয়ে বাবা কালাম আবারো মাদরাসায় যান। সেখানে গিয়ে রিমনের সুটকেট, বই-খাতা ও বিছানাপত্র পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেন। এরপর পড়ালেখা বাদ দিয়ে রিমনকে বাড়ি যেতে বলেন।

তবে ভয়ে আতঙ্কে রিমন বাড়ি না ফিরে সোজা দাদির কাছে চলে যায়। দাদি তার শারীরিক অবস্থা দেখে তাকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাবা কালাম তার ছেলেকে হাসপাতালে নেয়ার পথে বাধা দেন। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় রিমনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাতে সক্ষম হয় তার দাদি ও মা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে আহত শিশুকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছিলেন রিমনের মা জেসমিন বেগম। আর সাংবাদিকদের প্রশ্নে ফেল ফেল তাকিয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালাম বলেন, ‘আমার ছেলেকে আমি মারছি। এতে কার কি? ছেলে অন্যায় করলে শাসন করমো না? তারে আদর করমো?’

মুনশুরপুর মদিনাতুল মনোয়ারা হাফিজিয়া মাদরাসার মুহতামিন মাওলানা মো. আবু হানিফ বলেন, ঘটনার সময় আমি মাদরাসায় ছিলাম না। তবে ঘটনা শুনেছি। কিন্তু রিমনের ট্রাংক, বই-খাতা ও বিছানাপত্র পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার সময় মাদরাসার হুজুর আল-আমিন ও আব্দুল গফুর বাধা দিলেও রিমনের বাবা কালাম সে বাধা মানেনি।

Source : বাংলামেইল২৪ডটকম