এ পাতার অন্যান্য সংবাদ
জুয়েলারী জগতে আলোচনার কেদ্রবিন্দুতে “ডায়মন্ড সিটি” বাংলাদেশ বিমানে নিয়োগ পাচ্ছে ৩০০ নতুন কেবিন ক্রূ , ছেলেমেয়ে উভয়ই ইউএস-বাংলার বহরে নতুন বোয়িং যুক্ত ‘চাকরির হতাশায়’ ঢাবি গ্রাজুয়েটের আত্মহত্যা ! এক যুগে পদার্পন করলো জবস এওয়ান ডটকম তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণ শুরু মে মাসে: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বান্দরবানে বাস খাদে, নিহত ৭ মোবাইল সেটও করতে হবে নিবন্ধন বিজয় দিবসে দীর্ঘ দিন পর স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে বিএনপি জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া নিবন্ধিত সিমের মেয়াদ ৬ মাসনতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশ
| ২ পৌষ ১৪২২ | Wednesday, December 16, 2015সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশ হয়েছে, যার ফলে জানুয়ারিতে নতুন কাঠামোয় বেতন তুলবেন তারা।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের তিন মাস পর মঙ্গলবার রাতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অষ্টম বেতন কাঠামোর এই গেজেট প্রকাশ করা হয়।
টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এনিয়ে আপত্তি জানিয়ে আন্দোলনেও নেমেছিল।
এরপর এই বেতন কাঠামো পর্যালোচনায় একটি কমিটি হলেও তার কোনো সুরাহা না হওয়ার মধ্যে গেজেট প্রকাশ হল।
গেজেট প্রকাশ হওয়ায় আগামী জানুয়ারি মাসে যে বেতন তুলবেন ২১ লাখ সরকারি কর্মী, তা নতুন কাঠামোয়।
গত ১ জুলাই থেকে নতুন এই বেতন কাঠামো কার্যকর ধরা হবে বলে সেই অর্থ বকেয়া হিসেবে পাবেন তারা।
গেজেটে বলা হয়েছে, “কর্মচারীগণ ১ জুলাই ২০১৫ তারিখ হইতে এই আদেশ জারির তারিখ পর্যন্ত সময়ের বেতন বকেয়া হিসেবে প্রাপ্য হইবেন।
“এই আদেশের অধীন প্রদেয় অন্যান্য সকল ভাতা ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে প্রাপ্য অঙ্কে ৩০ জুন ২০১৬ তারিখ পর্যন্ত প্রদান করা হবে।”
নতুন বেতন কাঠামো কার্যকরের সঙ্গে সঙ্গে ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বিলুপ্ত হলেও যে সব কর্মচারী ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে অবসরোত্তর ছুটি বা পিআরএলে রয়েছেন, তারা ৩০ জুন ২০১৫ সালে যে হারে মহার্ঘ ভাতা পেতেন, সে হারে পেতে থাকবেন বলে গেজেটে বলা হয়েছে।
অষ্টম বেতন কাঠামোতে ২০টি গ্রেডের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল বেতন ৭৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন মূল বেতন ধরা হয়েছে ৮২৫০ টাকা। যাতে বেতন বেড়েছে গ্রেড ভেদে ৯১ থেকে ১০১ শতাংশ।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও এদের সমমর্যাদার পদের বেতন ৮৬ হাজার টাকা এবং জ্যেষ্ঠ সচিব ও সমমর্যাদার পদের বেতন ৮২ হাজার টাকা নির্ধারিত থাকছে।
বিদ্যমান সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বিলোপ করে গেজেটে বলা হয়েছে, কোনো স্থায়ী কর্মচারী পদোন্নতি ছাড়া একই পদে ১০ বছর সন্তোষজনকভাবে চাকরি করলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে একাদশ বছরে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেডে বেতন পাবেন।
আর কোনো স্থায়ী কর্মচারী চাকরির ১০ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডে বেতন পাওয়ার পর পরবর্তী ছয় বছর পদোন্নতি না পেলে তার চাকরি সন্তোষজনক হলে সপ্তম বছরে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেডে বেতন পাবেন বলে গেজেটে উল্লেখ রয়েছে।
গেজেট প্রকাশের আগের দিন অর্থাৎ গত ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব সরকারি কর্মচারী সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল পেয়েছেন, তা বহাল থাকবে বলেও গেজেটে বলা হয়েছে।
নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, প্রতি বছরের ১ জুলাই একসঙ্গে সব সরকারি কর্মচারীর বেতন বাড়বে।
এছাড়া নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাংলা নববর্ষ ভাতা পাবেন।
নতুন স্কেলে শুধু বেতন দিতেই চলতি অর্থ বছরে সরকারের ১৫ হাজার ৯০৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। আগামী বছর বেতন-ভাতা খাতে অতিরিক্ত লাগবে ২৩ হাজার ৮২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
আগের বেতন কাঠামোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত বেতন কমিশন গত বছরের ২১ ডিসেম্বর অষ্টম বেতন স্কেলের সুপারিশ জমা দেন। ১৬টি গ্রেডে সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা মূল বেতন ধরে নতুন কাঠামো প্রস্তাব করে কমিশন।
ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সচিব কমিটি গত ১৩ মে সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ এবং সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা মূল ধরে কাঠামো সুপারিশ করে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে পর্যালোচনার পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল ধরে নতুন কাঠামো অনুমোদন করা হয়।
নতুন বেতন কাঠামোর বিভিন্ন দিক
* শিরোনাম- চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫
* ২০ গ্রেডের সর্বোচ্চ গ্রেডের বেতন ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন গ্রেডের বেতন ৮ হাজার ২৫০ টাকা। গ্রেড ভেদে বেতন বেড়েছে ৯১ থেকে ১০১ শতাংশ।
* কোনো স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছার এক বছর পর পরবর্তী টাইমস্কেলে উত্তরণ বিলুপ্ত; এখন থেকে কেউ পদোন্নতি ছাড়া এক পদে ১০ বছর থাকার পর সন্তোষজনক কাজের নিরিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী গ্রেডে যাবেন।
* প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণিভেদ আর থাকছে না; পরিচিতি হবে গ্রেডের ভিত্তিতে।
* পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নববর্ষ ভাতা পাবেন সবাই মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে। আগের দুটি উৎসব ভাতা থাকছে।
* পার্বত্য জেলা সদরে কর্মরত সব কর্মচারী মূল বেতনের ২০ শতাংশ (সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা) হারে পাহাড়ি ভাতা পাবেন। সদরের বাইরের উপজেলায় এই ভাতা হবে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা।
* বাড়ি ভাড়া গ্রেড ও এলাকার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।
* এই বেতন কাঠামো জারির পর প্রত্যেক কর্মীকে নিজের বেতন নির্ধারণের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে (www.payfixation.gov.bd) জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে লগ ইন করে নির্দিষ্ট ছক পূরণ করতে হবে।
সূত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম