জুয়েলারী জগতে আলোচনার কেদ্রবিন্দুতে “ডায়মন্ড সিটি” কেবিন ক্রূ/ ফ্লাইট স্টুয়ার্ড নেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (ছেলেমেয়ে উভয়ই) বিনা অভিজ্ঞতায় “কেবিন ক্রু” পদে লোক নিবে নভো এয়ারলাইন্স, যোগ্যতা HSC, আবেদন করতে পারবে ছেলে মেয়ে উভয়ই। অচেনা নায়ক ! Unseen Hero !! কেবিন ক্রু নিয়োগ দেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ,যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক ,আবেদন করতে পারবে ছেলে মেয়ে উভয়ই বিনা অভিজ্ঞতায় “কেবিন ক্রু” পদে চাকরি, যোগ্যতা HSC পাশ, বেতন ৮০০০০ টাকা ইউএস-বাংলার বহরে নতুন বোয়িং যুক্ত ‘চাকরির হতাশায়’ ঢাবি গ্রাজুয়েটের আত্মহত্যা ! নতুন ৫ টিভি চ্যানেলের অনুমোদন , মিডিয়াতে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ জবস এওয়ানের এক যুগ পূর্তি
ঢাকা, এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৩:৫৪:১০

ফুটপাথের এক চা বিক্রেতা আমাকে অভিভুত করলো !!

| ১৩ শ্রাবণ ১৪২১ | Monday, July 28, 2014

একটি মন ভালো করা সংবাদ :

Photo

গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে জাপান গার্ডন সিটির সামনে রিং রোডের পাশে ফুটপাথের এক চায়ের দোকনের সামনে মোটর সাইকেলটা রেখে চা খাই। সাথে ছিলেন বন্ধু বেনজীর ভাই। চা খাওয়ার পরে বেনজীর ভাই চলে যায়, আমি চা বিক্রেতাকে আমার বাইকটার দিকে একটু লক্ষ্য রাখার অনুরোধ করে ঢুকে যাই পাশের প্রিন্স বাজারে। আমার স্ত্রী-পুত্র ওখানেই ছিল। গিয়ে দেখি ওরা নেই। মনে হলো, হয়তো ওরা রাস্তার উল্টোদিকে আগোরাতে গেছে। চলে যাই সেখানে, দেখি ওরা বেড়িয়ে আসছে। আমিও ওদের সাথে হাটতে হাটতে বাসায় চলে আসি, তখন রাত দশটা।

বেমালুম ভুলে যাই যে, বাইকটা রেখে এসেছি রাস্তার পাশে। রাতে একবারো মনে পড়ে না। সকালে ঘুম থেকে উঠি এগারোটায়। সাড়ে এগারোটায় আবার প্রিন্স বাজারে যাই, সাথে আমার ছেলে। বাজার করে ঘরে ফিরি। কিছুই মনে পড়ে না। বেলা আড়াইটায় বের হবো বলে আন্ডারগ্রাউন্ডে আমার গ্যরাজে গিয়ে দেখি বাইকটা নেই।

সেন্ট্রিরা সব ছুটে আসে, জাপান গার্ডনের সিকউরিটি’র প্রধান ছুটে আসে, বিল্ডিং কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন সদস্য ছুটে আসে…………সে এক হুলুস্থুল কান্ড। পুলিশকে জানানোর প্রস্তুতি নেয়া হতে থাকে, সিসিডিবি ক্যামেরা চেক করার উদ্যোগ নেয়া হতে থাকে………….. একই সময়ে আমরা মস্তিস্কও গতকাল রাতের সব স্মৃতি খুজতে শুরু করে।

……….হঠাৎ করেই আমি ভো দৌড়….এক দৌড়ে ঐ চায়ের দোকানের সামনে। দূর থেকে আগেই দেখতে পাই, আমার বাইকটা রাস্তা থেকে ফুটপাথে ওঠানো। চায়ের দোকানের টং টা পর্দা দিয়ে ঘেরা, রোজার মাসের কারণে। পর্দাটা টেনে ভেতরে মাথা দিতেই, দোকানদার মলিন মুখে শুধু একটা কথাই বলল……….’ “ভাই, এইটা কেমন কাজ করলেন?” কয়েক মুহূর্তর জন্য আমরা দজুনেই চুপচাপ। টং থেকে নামিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম বুকে………………….

কাহিনী যা শুনলাম তাতে সত্যিই আমি অভিভুত। বেচারা সারা রাত এই টঙ ঘরেই ছিল, শুধু বাইকটার জন্য। ও নিজেও অসুস্থ, একসিডেন্টে হাত কাটাছেড়া, ভেবেছিল কাল রাতে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যাবে। যায় নি, শুধু এই বাইটার জন্য। জাপান গার্ডনের সিকউরিটেদের গিয়ে বলেছিল, যে এটা আপনাদের কোন বাসিন্দার বাইক, রেখে দেন। কারণ ওর ধারণা হয়েছিল আমি জাপান গার্ডনে থাকি, কারন ওর দোকনে যারা চা খায তারা কমবেশি ওখানকার বাসিন্দা।

যাই হোক, সিকউরিটি ওর কথা শোনেনি, তারা উটকো কোন ঝামেলা পোহাতে রাজি হযনি হয়তো। রাত সাড়ে তিনটার দিকে দুজন ভা্যান ড্রাইভারএর সাহায্য নিয়ে বাইকটা রাস্থা তেকে ফুটপাথে উঠিয়ে রেখেছিল।

চা বিক্রেতার নাম জামাল। আজই জানলাম। ওকে কি বলে যে ধন্যবাদ দেব ভাবতে পারছি না। সন্ধ্যায় কয়েকবন্ধু মিলে ওর দোকনে যাবো। দেখি ওর ঈদের আনন্দটা আরো একটু ভালো করতে পারি কি না, কেননা ও আমার ঈদের আনন্দটা মাটি হওয়া থেকে আমাকে বাচিয়ে দিযেছে।

জামালকে বলেছিলাম, কয়েক মিনিট আমার বাইকটা দেখ। জামাল কয়েক মিনিট নয়, টানা ১৭ ঘন্টা বাইকটা আগলে রেখেছে। রাতে বাসায় যায়নি, বাইকটা যদি কেউ নিয়ে যায় এই ভয়ে। জামাল তার কথা রেখেছে, আমি কিংবা আপনি কি এরকম কথা রাখতে পারবো? সে কথা যতো ছোট, যতো সামান্যই হোক !!

- মনোয়ার মোস্তফার ফেইসবুক স্টেটাস থেকে নেয়া